somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অস্কারজয়ী দু'টি জার্মান ক্লাসিক মুভি

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
The Lives of Others


The Lives of Others (2006)
(German: Das Leben der Anderen)
Director: Florian Henckel von Donnersmarck


সময়টা ১৯৮৪। জার্মানীতে পূর্ব-পশ্চিমের দ্বিধাবিভক্তি। বার্লিন প্রাচির তখনও ভেঙ্গে পড়েনি। সাংস্কৃতিক কর্মীদের অনেকেই পশ্চিম জার্মানীর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলো। তাই পূর্ব জামার্নীতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে স্তিমিত করতে জার্মান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (জিডিআর) প্রশাসন উঠে-পড়ে লাগে। পূর্ব জার্মানীতে নাট্যকার ড্রেইম্যান ও তাঁর দীর্ঘদিনের বান্ধবী অভিনেত্রী মারিয়া খুবই জনপ্রিয় ও দেশের প্রধান বুদ্ধিজীবীদের অন্যতম। একটি মঞ্চনাটকের প্রদর্শনীতে দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী মারিয়ার প্রতি লিপ্সা অনুভব করে। ড্রেইম্যানকে শত্রু প্রতিপন্ন করার জন্য মন্ত্রী জার্মান সিক্রেট পুলিশ Stasi কে নির্দেশ দেয়।
ড্রেইম্যানের বাড়িতে ফোনে আড়িপাতা হয়। আর এ দায়িত্ব পায় ওয়েলার। মারিয়া নিজের ক্যারিয়ার বাঁচানোর জন্য মন্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ড্রেইম্যান ব্যাপারটা বুঝতে পারে কিন্তু প্রশাসনের কাছে তারা জিম্মি। উপরন্তু সে গোপনে পশ্চিম জার্মানীর বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ধরা পড়ে গেলে তাদের আন্দোলন সব ভেস্তে যাবে। ওয়েলার সব জানতে পারলেও কর্তৃপক্ষকে কিছুই জানায়না। সে উপলব্ধি করতে পারে জিডিআর প্রশাসন যা করছে তা অন্যায়। ওয়েলারও পরোক্ষভাবে ড্রেইম্যানকে সহায়তা করতে থাকে, তাদের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ড্রেইম্যান বা প্রশাসন এসবের কিছুই জানতে পারেনা। তৎকালীন পূর্ব জার্মানীতে টাইপরাইটার রেজিস্টার করতে হতো। ড্রেইম্যান গোপনে আনরেজিস্টার্ড টাইপরাইটার দিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে যা জিডিআরকে ক্ষেপিয়ে দেয়। সন্দেহের তীর ড্রেইম্যানের দিকে। শেষ পর্যন্ত মারিয়া, ড্রেইম্যান আর ওয়েলারকে চরম মূল্য দিতে হয়। আর তার কিছুদিন পরই বার্লিন প্রাচীর গুড়িয়ে দেওয়া হয়। ড্রেইম্যানের কাছে অজনান রয়ে যায় তার শুভাকাঙ্খীর নাম।
৭৯ তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে এবং ৬৪ তম গ্লোডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডে শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে মুভিটি পুরস্কার জিতে নেয়।
আইএমডিবি রেটিং: ৮.৫/১০


The Counterfeiters


The Counterfeiters (2007)
(German: Die Fälscher)
Director: Stefan Ruzowitzky


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উপর সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত একটি ক্লাসিক। ছবিটি দেখে অনেকেরই মনে পড়ে যাবে হোটেল রুয়ান্ডা ও শিল্ডলার্স লিস্ট মুভি দু’টির কথা। মুভিটি আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিবে অপারেশন বার্নহার্ড (Operation Bernhard) এর সঙ্গে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ অর্থনীতিকে ধসিয়ে দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ পাউন্ডের জালনোট তৈরি করার একটি গোপন পরিকল্পনা করে জার্মানরা যা ইতিহাসে অপারেশন বার্নহার্ড নামে পরিচিত।
ছবিটির মূল চরিত্র সালোমন নামের একজন জার্মান ইহুদি । সালোমন জাল নোট তৈরি করতে বিশেষ দক্ষ। যুদ্ধের সময় জার্মান বাহিনী তাকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। জালনোট তৈরি করতে পারায় সালোমন অপারেশন বার্নহার্ডে অজান্তেই জড়িয়ে পড়ে। তার নেতৃত্বে ক্যাম্পের বন্দীরা সফলভাবে ব্র্রিটিশ পাউন্ড জাল করতে সক্ষম হয়। প্রথমে সালোমন নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় ব্যস্ত থাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে তার চাতুর্য আর চেষ্টাতেই ক্যাম্পের অসংখ্য বন্দী বেঁচে থাকার শক্তি পায়। ব্রিটিশ পাউন্ড জাল করার পর তাদের হাতে দায়িত্ব পড়ে ইউএস ডলার জাল করার। কিন্তু বন্দীরা বুঝতে পারে এ কাজ শেষ হয়ে গেলে জার্মানরা তাদেরকে আর বাঁচিয়ে রাখবেনা। সালোমন কৌশলে কাজ শেষ করতে সময় নেয়। কিন্তু কাজ সময় মত শেষ করতে না পারলেও মৃত্যু অনিবার্য।
৮০ তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে মুভিটি পুরস্কার জিতে নেয়। মুভিটি জার্মান ভাষায় নির্মিত । তবে অস্ট্রিয়ায় নির্মিত হওয়ায় অস্কার যায় অস্ট্রিয়ার ঘরে।

মুভি ছাড়াও অপারেশন বার্নহার্ড নিয়ে বিবিসির Private Schulz নামে একটি মিনি সিরিজ রয়েছে।
আইএমডিবি রেটিং: ৭.৬/১০

আমি মুভি ডিভিডিতে দেখি তাই ডাউনলোড লিংক দিতে পারছিনা বলে দু:খিত। তবে মুভি ডাউনলোডের জনপ্রিয় সাইটগুলোতে মুভি দুইটি পাবেন বলে আশা রাখি।
ধন্যবাদ :)

ক্রিস্তফ কিয়েসলোস্কির দি থ্রি কালার ট্রিলজি : ব্লু, হোয়াইট, রেড (The Colors: Blue , White, Red)

আমার প্রিয় সিনেমা: ব্যালাড অফ এ সোলজার
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:১৬
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×